মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু: মাওলানা মোস্তাক ফয়েজীর ভাইরাল ট্রেন্ড ও এর প্রভাব, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বাক্য বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়েছে: "মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু হু হু হু"।
মাওলানা মোস্তাক ফয়েজীর এই উক্তি তার ওয়াজ মাহফিলের একটি ভাষণের অংশ ছিল, যা এখন হাস্যরসের মাধ্যমে প্রচারিত হয়ে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়ে গেছে। টিকটক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে ভিডিও এবং মিমগুলোর মাধ্যমে এটি এখন তরুণ সমাজের কাছে বিনোদনের নতুন উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তবে এই উক্তির পেছনের গল্প এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিস্তারিত জানলে আমরা বুঝতে পারবো কেন এটি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু হু হু হু- এই ভাইরাল ভিডিওটির উৎপত্তি
মাওলানা মোস্তাক ফয়েজীর এই উক্তিটি প্রথমে তার একটি ওয়াজ মাহফিলে ব্যবহৃত হয়। এই বক্তব্যের মধ্যে তিনি উল্লেখ করেন যে, সরকারের পরিবর্তনের সময় অনেক মুরুব্বি, অর্থাৎ যারা সমাজের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বে ছিলেন, তারা দাড়ি কামিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এই সময়ে তিনি বলেন, “মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু হু হু হু।” এই বাক্যটি হাস্যরসাত্মকভাবে এমনভাবে বলা হয়েছিল যে, তা দ্রুত তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি নতুন ট্রেন্ডে পরিণত হয়।
মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রসার
যেমনটা আমরা জানি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের শক্তি এখন বিশাল। টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব এবং ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে একটি সাধারণ কথা বা ঘটনা খুব সহজেই ভাইরাল হতে পারে। "মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু" বাক্যটিও তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
টিকটকে এই বাক্যটির উপর নানা মজার ভিডিও এবং রিলস তৈরি হয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মের বিনোদনের নতুন উপায়ে পরিণত হয়েছে। মজার বিষয় হলো, শুধু বাংলাদেশ নয়, বিদেশিরাও এই বাক্যটি নকল করছে এবং বিভিন্ন ভিডিও বানাচ্ছে। তারা বাংলায় কথা বলতে পারছে না ঠিকই, তবে এই বাক্যটি নকল করে তারা অনেক মজা পাচ্ছে।
মুরুব্বি মুরুব্বি টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে এর জনপ্রিয়তা
টিকটক হলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি, যেখানে ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করে ব্যবহারকারীরা তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করেন। "মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু" বাক্যটির উপর টিকটকে কয়েক লক্ষ ভিডিও তৈরি হয়েছে, এবং এই ট্রেন্ডটি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রতিটি ভিডিওতেই ব্যবহারকারীরা ভিন্নভাবে মজার কন্টেন্ট তৈরি করছেন। একইভাবে ইনস্টাগ্রামেও এই ট্রেন্ডটি ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। ইনস্টাগ্রামের রিলস ফিচারটি ব্যবহার করে তরুণরা তাদের সৃজনশীলতা দেখানোর জন্য এই বাক্যটি ব্যবহার করছেন।
ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটকের এসব ভিডিওতে মজার পরিবেশনায় "মুরুব্বি মুরুব্বি" কথাটির বিভিন্ন সংস্করণ দেখা যায়। অনেকে এটিকে হাস্যকর পরিস্থিতিতে ব্যবহার করে, আবার অনেকে এটি নিয়ে নানারকম মিম তৈরি করছে। এমনকি বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশের ব্যবহারকারীরাও মজার ভিডিও তৈরি করছে, যেখানে তারা "মুরুব্বি মুরুব্বি" বলে নকল করছে।
মুরুব্বি মুরুব্বি ইউটিউব ও ফেসবুকে ভাইরাল
ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতেও এই উক্তিটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ফেসবুকে রিলস, ভিডিও, এবং মিম আকারে "মুরুব্বি মুরুব্বি" ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
একইভাবে, ইউটিউবে অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর এই ট্রেন্ডের উপর ভিত্তি করে নতুন ভিডিও তৈরি করেছেন। এই ভিডিওগুলোতে মাওলানা মোস্তাকের মূল বক্তব্যকে হাস্যরসে রূপান্তরিত করে প্রকাশ করা হয়েছে, যা দর্শকদের মনে বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মোস্তাক ফয়েজির মুরুব্বি মুরুব্বি কথার প্রতিক্রিয়া
এত জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর মাওলানা মোস্তাক ফয়েজি নিজেও অবাক হয়েছেন। তিনি বলেন, "আমি কল্পনাও করিনি যে, এই বাক্যটি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
এটি মূলত একটি সিরিয়াস প্রেক্ষাপটে বলা হলেও, তরুণ প্রজন্ম এটিকে ভিন্নভাবে গ্রহণ করেছে।" তিনি আরও যোগ করেন, "যখন আমি রাস্তায় বের হই, তখন দেখি রিকশার পেছনে লেখা রয়েছে 'মুরুব্বি মুরুব্বি'। এমনকি বিভিন্ন গ্রাফিতিতেও এটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
মুরুব্বি মুরুব্বি শব্দটির জনপ্রিয়তার কারণ
মুরুব্বি শব্দটির সামাজিক গুরুত্ব এবং মাওলানা মোস্তাকের বক্তব্যের প্রেক্ষাপট হলেও, এটি কিভাবে বিনোদনে রূপ নিল তা বোঝার জন্য আমাদের তরুণদের সৃজনশীলতাকে বুঝতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্রুত প্রসার এবং তরুণদের সৃজনশীল মনের জন্য একটি সাধারণ বাক্যও কিভাবে বিনোদনের উপাদানে পরিণত হতে পারে, এটি তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু এই কথার ট্রেন্ড ও ভবিষ্যৎ
এই ধরনের ভাইরাল ট্রেন্ডগুলো প্রমাণ করে যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে কোনো বিষয় কত দ্রুত এবং কত সহজে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি শুধু বিনোদনই নয়, বরং সামাজিক পরিবর্তনের প্রতিফলনও হতে পারে।
বর্তমান যুগে তরুণরা যেভাবে তাদের নিজেদের চিন্তাভাবনাকে প্রকাশ করছে এবং নতুন ট্রেন্ড তৈরি করছে, তা সমাজে নতুন ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে। "মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু" ট্রেন্ডটি আরও কতদিন স্থায়ী হবে, তা বলা কঠিন। তবে এটি নিশ্চিত যে, তরুণদের মধ্যে বিনোদনের এই উপাদানটি আপাতত হারানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।
মোস্তাক ফয়েজীর "মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু - শেষ কথা
মাওলানা মোস্তাক ফয়েজীর "মুরুব্বি মুরুব্বি উহু উহু" উক্তিটি তরুণ প্রজন্মের মজার উপাদানে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে এটি যে পরিমাণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তা সামাজিক বিনোদনের একটি নতুন ধারা প্রমাণ করছে।
0 মন্তব্যসমূহ